বিষ্ণুপুর ঘরানার শাস্ত্রীয় সঙ্গীত

in Module
Published on:

শর্মিষ্ঠা (Sharmistha )

ছেলেবেলা ও স্কুলজীবন কেটেছে বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর শহরে।
ইনফরমেশন টেকনলজিতে বি.টেক করার পর তিন বছর কাজ করেছেন সফটওয়ার ইন্ডাস্ট্রিতে - কগনিজেন্ট টেকনলজি সলিউশনসে। তারপর চাকরি ছেড়ে লেখালেখি করতে আসা। প্রথম প্রকাশিত কবিতা ‘স্পর্ধা’ (দেশ ২০১৫) প্রথম ছোটোগল্প ‘না পৌঁছনো মানুষ’ (দেশ - ২০১৬)। বিভিন্ন বাংলা পত্র পত্রিকায় তাঁর লেখা প্রকাশিত হয়। পছন্দের বিষয় ইতিহাস এবং বিশ্বসাহিত্য।

ভারতের শাস্ত্রীয় সংগীতের ইতিহাসে বিষ্ণুপুর ঘরানা একটি উজ্জ্বল নাম। অখন্ড বাংলার একমাত্র এবং নিজস্ব এই ঘরানা ধ্রুপদকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। ধ্রুপদ ছাড়াও খেয়াল, ধামার, তারানা, ঠুমরী টপ্পার সার্থক চর্চা চলেছে গুরু শিষ্য পরম্পরায়। কন্ঠসঙ্গীতের পাশাপাশি মল্লভূমি বিষ্ণুপুরের সঙ্গীতগুণীরা উৎকর্ষের শিখর ছুঁয়েছেন সেতার, এস্রাজ,সুরবাহার, বীণা পাখোয়াজ প্রভৃতি যন্ত্রবাদনে।

বৈষ্ণবধর্ম ক্লাসিক কীর্ত্তণের চর্চা বিষ্ণুপুর ঘরানার বিকাশে বিশেষ সহায়ক হয়েছিল। মল্লরাজাদের সঙ্গীতপ্রীতি পৃষ্ঠপোষকতাও এই ঘরানার উত্থানে সাহায্য করে। বিষ্ণুপুর ঘরানার বৈশিষ্ট্য এর ওস্তাদিবর্জিত নিবেদনের ভাব। গুরু রামশঙ্কর ভট্টাচার্য্য এই ঘরানার ভিত প্রতিষ্ঠাতা রামশঙ্কর ভট্টাচার্য্যের প্রতিভাবান মহান শিষ্যদের মধ্যে ছিলেন রামকেশব ভট্টাচার্য্য, ক্ষেত্রমোহন গোস্বামী, অনন্তলাল বন্দোপাধ্যায়, যদুভট্ট (যদুনাথ ভট্টাচার্য্য) প্রমূখ। রামশঙ্কর বিষ্ণুপুরে অবস্থান করলেও তার শিষ্যরা ক্রমে বাংলার নানা স্থানে ছড়িয়ে পড়েন। এদের পর এই ঘরানার ভার ন্যাস্ত হয় রাধিকা প্রসাদ গোস্বামী, রামপ্রসন্ন বন্দ্যোপাধ্যায়, গোপেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ সঙ্গীতগুণীদের ওপর। এই ধারায় তারপর আসেন সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, সত্যকিঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, জ্ঞানেন্দ্র প্রকাশ গোস্বামী, গোকুল নাগ (সেতার), অশেষ বন্দ্যোপাধ্যায় (সেতার, সুরবাহার, এস্রাজ) প্রমুখ। বাংলার সঙ্গীত জগত এঁনাদের অবিস্মরণীয় অবদানে ঋদ্ধ হয়।