বাঙালির সঙ্গীতচর্চার একটি বিশেষ ধারা তরজাগান। যদিও সময়ের সাথে সাথে এই ধারা আজ হারাতে বসেছে তার কৌলিন্য, তবু এর মধ্যে লোকরঞ্জনের যে আশ্চর্য ক্ষমতা বোধ করি তার ফলেই গ্রামীণ সমাজ আজও টিকিয়ে রেখেছে এই দেশীয়রীতির সঙ্গীত-নাট্যধারাটি। বর্তমান দিনে রামায়ণ-মহাভারত-বেদ-পুরাণদির কাহিনির পাশাপাশি নিরক্ষরতা দূরীকরণ, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, মহিলাদের সমানাধিকার দানসহ নানান প্রয়োজনাত্মক কাজে তরজাকে ব্যবহার করা হচ্ছে। আজকাল বারোয়ারি পূজা-আর্চা, মেলা কিংবা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়াও ভোটমঞ্চে তরজাগানের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ব্যবহার চোখে পড়বার মতো। তরজাগানের সেইসব খুঁটিনাটি আলোচনাসহ দুই বা ততোধিক শিল্পীরা নিজেদের মধ্যে ছদ্ম-লাড়াইয়ে, কথা ও সুরের যাদুতে, কোনো বিষয়কে হেঁয়ালি বা প্রহেলিকার মাধ্যমে কীভাবে আসরে উপস্থাপন করে থাকেন -এই ডকু-ফিল্মটিতে সেটাই দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এই ডকু-ফিল্মটিতে উপস্থিত তরজাশিল্পীরা হলেন, শ্রীশিবপদ মণ্ডল, শ্রীমনসুর আলি, শ্রীমতী অলকা গায়েন (মূলগায়েন) এবং শ্রীশিশুবর সরদার, শ্রীগোবিন্দ বিশ্বাস (সহকারী তথা যন্ত্রশিল্পীবৃন্দ)।
বিশ্বজিৎ হালদার (Biswajit Halder)
বিশ্বজিৎ হালদারের জন্ম ও বড় হওয়া ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলায়। তিনি বর্তমানে, কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের, ইউ জি সি সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্টাডি (ফেজ ৩) এর তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগীয় প্রকল্প সহায়ক। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্মানিক স্নাতক। বাঙলা ভাষায় স্নাতকোত্তর উপাধি পেয়েছেন। এছাড়া তুলনামূলক সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ও এম ফিলl উপাধিপ্রাপ্ত (যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়)। তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগের পি এইচ ডি উপাধিও অর্জন করেছেন। আগে (মার্চ ২০১১ – ২০১৫) তিনি ইউ জি সি সে৩ন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্টাডি (ফেজ ২)এর তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগে তিনি প্রজেক্ট ফেলো হিসাবে কাজ করেছেন। তাঁর বিশেষ আগ্রহের বিষয় লোক সংস্কৃতি ও সেই বিষয়ে তথ্যমূলক বর্ণনা, লোকমুখে প্রচলিত আখ্যান, করণ শিল্প সম্পর্কিত বিদ্যা, দেশজ ঐতিহ্য। তিনি অনেক প্রবন্ধ ও বইয়ের রচয়িতা, যেমন “লোক ঐতিহ্যের ধারায় দুই চব্বিশ পরগণার শিব সংস্কৃতিঃ চড়ক, ধর্মদোল, গাজন ও বালাগান” (২০১৩), “রামায়ণ গানঃ চব্বিশ পরগনার রামকথার মৌখিক ঐতিহ্য” (২০১৫)|